মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরার শত্রুজিৎপুরের ফসলের মাঠজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। দিগন্তজুড়ে হলুদ ফুলে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে কৃষক।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সরিষার সবুজ গাছের ফুলগুলো শীতের সোনাঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরূপ সুন্দর দৃশ্য। দেখে যেন মনে হচ্ছে প্রকৃতি কন্যা সেজেছে গায়ে হলুদ মেখে। মৌমাছি গুন গুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহ আর প্রজাপতির এক ফুল থেকে আরেক ফুলে পদার্পণ এ অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই যেন মনোমুগ্ধকর এক মুহূর্ত। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠ জুড়ে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নানা বয়সের বিনোদন প্রেমীরা। সরিষা খেত ঘুরে ঘুরে দেখছেন।
মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরিষা চাষে এই উপজেলায় ২০২3 সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১০ হেক্টর। ২০২4 সালে নির্ধারণ করা হয়েছে ৯১৭ হেক্টর জমি। উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে ৮৮৫ হেক্টর জমিতে। তিনি জানান, উপজেলার শত্রুজিৎপুর, ধর্মদাহ, ধলহরা, জগদল ইউনিয়নগুলোতে সরিষা চাষ বেশি করা হয়েছে। সরিষা চাষের জন্য এলাকার কৃষকরা বারি- ১৪,১৭ বারি-১৬,১৯, ৪,বেছে নিয়েছে।অবশ্য এবছরের প্রথম বারি-১৮ জাতের সরিষা আবাদও করেছে কৃষকরা।
উপজেলার শত্রুজিৎপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর এলাকার কৃষক দুলাল মিয়া জানান, আমি এবছর ১৪৫ শতাংশ জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। গতবছর থেকে এবার সরিষা বুনছি একটু বেশি । সরিষা আবাদে খরচ অনেক কম কিন্তু দাম যদি একটু হয় তাহলে আমাদের ভাল হবে। সরিষা ভাল ফলন হলে প্রতি মণ ৩ হাজার ৫শত টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করার আশা করছি।
একই এলাকার গোলাম মিয়া, রিপন মিয়া, বলেন, আমাদের সরিষা খেত খুবই ভালো হয়েছে। প্রতি বছর হালকা বৃষ্টি হয়, কিন্তু এই বছর এখনো বৃষ্টি হয়নি। যদি বৃষ্টি হয় তাহলে ক্ষেতের ক্ষতি হবে। কারণ বৃষ্টি হলে ফুল নষ্ট হয়ে যায়।
সরিষা খেতে ঘুরতে আসা সোরোয়ার শিকদার নামে একজন বলেন, সরিষা খেতে ঘুরতে এসেছি খুবই ভালো লাগছে, চোখ যতদূর যায় ততদূর শুধু হলুদ আর হলুদ। গতবছরও ঘুরতে এসেছিলাম।
মাগুরা উপজেলা কৃষি অফিসার মো: হুমায়ুন কবির জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার ভাল ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে উপজেলায় সরিষা আবাদের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। শুধু তাই নয় সরিষা চাষের জমিগুলোয় ঊর্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা এবার বোরো চাষেও এর ভালো সুফল পাবে। আমাদের ভোজ্যতেলের চাহিদা ৪০ শতাংশ দেশে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। সরিষা আবাদ বাড়াতে প্রণোদনা কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। কৃষক যেন ভালো ফলন পায় সে লক্ষে কৃষি বিভাগের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।